ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা-দীক্ষা পাচ্ছে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে কর্মে জড়িয়ে যেতে হয়।' কথাগুলো বলতে বলতে এক বুক হতাশার অাঁধার নেমে আসে মীরসরাইয়ের করেরহাট ত্রিপুরাপাড়ার সর্দার ঊষা কুমার ত্রিপুরার। তিনি আরো জানান, 'নির্বাচন আসলেই প্রার্থীরা আমাদের কাছে দোয়া, ভোট কামনা করে আমাদের বিভিন্ন আশা দিয়ে যায়। কিন্তু আজো প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে তারা ব্যর্থ। সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোনো সাহায্যও আসে না তারপরও বর্তমানে আমাদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় হলে মনে স্বস্তি পেতাম।' চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার করেরহাট সাহেব নিখিল ত্রিপুরাপাড়ায় একটি বিদ্যালয়ের অভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত আড়াইশ' ছেলে-মেয়ে। নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়ে যায় এ ত্রিপুরাপাড়ায়। রাস্তা, স্কুল, বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা হবে এমন সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট আদায় করে নেয় এ এলাকার ভোটারদের থেকে। নির্বাচন শেষে প্রতিশ্রুতিগুলো স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি হয়ে থাকে; বাস্তবতা ছুঁতে পারে না এসব কথামালাকে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ত্রিপুরাপাড়ার ১৫০ পরিবারের প্রায় ২৫০ জন ছেলে-মেয়ে থাকলেও ৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে করেরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় ও করেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে মাত্র ৪০ জন ছেলে-মেয়ে। বর্ষাকালে পাড়ার আশপাশে হাঁটু পরিমাণ পানি হয়ে যায়। তখন আর বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না এসব শিক্ষার্থীর। বিদ্যালয় সংকট ও যাতায়াত সমস্যায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পাড়ার ৫ থেকে ১৮ বয়সের আড়াইশ' ছেলে-মেয়ে। ত্রিপুরাপাড়া থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে করেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমি রানী ত্রিপুরা। তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। সে জানায়, 'আমার সঙ্গে আরো ৫ জন মেয়ে স্কুল যায়। বিদ্যালয়ের দূরত্ব বেশি হওয়ায় আমাদের মতো অনেকেই স্কুলে যেতে পারে না। এখানে একটি স্কুল হলে আমাদের মতো প্রায় আড়াইশ' শিক্ষার্থী শিক্ষার আলো পেতো। রাস্তার অভাবে শুষ্ক মৌসুমে মানুষের চাষের জমি দিয়ে স্কুলে গেলেও বর্ষাকালে আমাদের স্কুলে যাওয়া হয় না।' নব-লক্ষ্মী ত্রিপুরা সরকারের এমপি-মন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, 'সবাই শুধু রাস্তা করে দেবো, স্কুল দেবো বলে ভোট নেয়। এসব দেয়া তো দূরের কথা, আমাদের খবর নিতেও তারা কেউ আসে না।' বর্ষাকালে ত্রিপুরাপাড়ার আদিবাসীদের মানবেতর জীবনযাপনের কথা স্বীকার করেছেন উপজেলার ১নং করেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, 'ওই এলাকায় নিজস্ব কোনো খাস জমি না থাকায় রাস্তার কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তবে ছেলে-মেয়ে এত বেশি নয় যে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা আছে তারা ইউনিয়নের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তাদের জন্য কিছু করার
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস